Skip to main content

বাংলা সাহিত্য : সম্পাদকীয় । গ্লোবাল সংস্কৃতি - আলী হোসেন

গ্লোবাল সংস্কৃতি


বাংলা সাহিত্য কাকে বলে? এ প্রশ্ন তুললে অনেকেই অবাক হবেন। অনেকে প্রশ্ন তোলার চেষ্টাকেই প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেবেন। সহজেই বলে দেবেন, বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যই ‘বাংলা সাহিত্য’। আমাদের ক্ষমতা নেই উত্তরের নীচে লাল দাগ টেনে দিই। কিন্তু প্রশ্ন তোলার অধিকার আমার আপনার সাংবিধানিক অধিকার, আবার জন্মগতও। তাই, সেই অধিকারের উপর ভর করে আমরা আমাদের মতামত দিতেই পারি।

তথ্যপ্রযুক্তির বৈপ্লবিক অগ্রগতির ফলে সমগ্র পৃথিবীটাই এখন ‘গ্লোবাল ভিলেজ’-এ পরিণত হয়েছে। ঐতিহাসিক কারনেই ইংরাজি ভাষা এখন আর শুধুই ইংরেজের নয়, এখন তা ‘গ্লোবাল ভাষা'। তাই দ্রুত বদলে যাওয়া পৃথিবীর সাথে নিজেকে অন্বিত করতে প্রায় প্রত্যেকেই এই ভাষার সাহায্য নিয়ে থাকেন। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে বসে যেকেউ যেকোন ভাষায় তার সময়কে (সমাজ, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি...) বিশ্লেষণ করতে পারেন, অন্যের সামনে তুলে ধরতে পারেন।

তাহলে কি বাংলা সাহিত্যকে ‘বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্যকর্ম’ - এই গণ্ডির মধ্যে বেঁধে রাখতে পারি?
আসলে, সাহিত্য ভাষা-কেন্দ্রিক হওয়ার সময়টা বোধহয় শেষ হয়ে এসেছে। তথ্যপ্রযুক্তির বৈপ্লবিক অগ্রগতি মানুষকে আর নির্দিশষ্ট ভৌগোলিক গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ থাকতে দিচ্ছে না। সমস্ত পৃথিবীটাই তার আপন সমাজ হয়ে উঠছে, ভাবনার বা বিশ্লেষণের বিষয় হয়ে উঠছে; জন্ম নিচ্ছে ‘গ্লোবাল সংস্কৃতি'।
তবু ভাবনার সুবিধার জন্য, নির্দিষ্ট জাতিসত্তার স্বাতন্ত্রতা বজায় রাখার জন্য একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকাকে এবং তার সমাজ-সংস্কৃতি, রাজনীতি-অর্থনীতিকে কেন্দ্র করেই আমাদের সাহিত্য ভাবনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

সুতরাং ভাষা নয়, নির্দিষ্ট ভাষাগোষ্ঠীর জীবন হয়ে উঠুক সাহিত্যের নামকরণের মানদণ্ড। তা যদি মানতে পারি, তবে বাঙালীর জীবনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ইংরাজি ভাষায় রচিত সাহিত্যও ‘বাংলা সাহিত্য'। আর এই ভাবনা থেকেই আমরা আমদের প্রথম সংখ্যায় স্থান দিয়েছি দুটি ইংরাজি ভাষায় লেখা সাহিত্যকর্ম।

আজ এই পর্যন্ত। ভালো ভাবুন, ভালো থাকুন।

Comments

  1. সম্পাদকিও খুবি ভাল লাগল । যথাযথ ।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

বাংলা সাহিত্য : সম্পাদকীয়। ডিসেম্বর। ২০১৮

প্রতিভার বিকাশ ও বর্তমান ভারত : প্রতিটি শিক্ষিত ও সচেতন মানুষ জানেন সব সম্পদের সেরা সম্পদ হল মানব সম্পদ। কারণ এই সম্পদকে বাদ দিয়ে প্রকৃতির কোন সম্পদই সত্যিকারের সম্পদ হয়ে উঠতে পারে না। আবার এই মানব সম্পদ সত্যিকারের সম্পদ হয়ে উঠতে অপরিহার্য হল তার প্রতিভা। এটা নিয়েই মানুষ পৃথিবীতে আসে। কিন্তু তার বিকাশ হয় এই পৃথিবীতেই। এক্ষেত্রে সরকারকে নিতে হয় গুরুদায়িত্ব। না হলে তা সম্পদ হয়ে ওঠে না। মানব সম্পদের বিকাশে তাই প্রত্যেকটি দেশকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হয়।

বাংলা সাহিত্য : সম্পাদকীয়। অক্টোবর। ২০২০। আলী হোসেন

সমাজতন্ত্রই প্রকৃত পথ। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে লক্ষ্যে পৌঁছানোর পদ্ধতি এবং প্রকৌশল বদলায়। বিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতে যে পদ্ধতিতে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, সেই পদ্ধতিতে বিপ্লব (পরিবর্তন) করা আজ অনেক কঠিন। তার প্রয়োজন আছে বলেও আমার মনে হয় না। মতপার্থক্যের কথা বলছেন? তা তো থাকবেই। ধনতান্ত্রিকদের মধ্যে মত পার্থক্য নেই? তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত নয়? সুতরাং মতপার্থক্য থাকবে। আর এটাই স্বাভাবিক। এই মতপার্থক্যকে মতৈক্যে পরিণত করার দায় এবং দায়িত্ব একমাত্র জনগণেরই নিতে হয়। আমার, আপনার এবং আমাদেরই নিতে হবে। আমরা যদি বুঝতে পারি, দুটো অর্থনৈতিক ব্যবস্থার (ধনতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক) মধ্যে কোনটা আমাদের জন্য উপযুক্ত, তাহলে সেই ব্যবস্থার সমর্থকদেরকে আমাকে নির্বাচিত করতে হবে। তারা বহু দলে বিভক্ত হলেও, একটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের ভিত্তিতে তারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। ঐক্যবদ্ধ যে হতে পারে, তার উদাহরণ বামফ্রন্ট তৈরি হওয়া, ইউপিএ তৈরি হওয়া এবং এনডিএ তৈরি হওয়া। মানুষ যেদিকে যাবে, রাজনৈতিক দল সেই দিকেই পথ হাঁটতে বাধ্য হবে। এটাই ইতিহাসের শিক্ষা। এখন আমি বা আপনি, এককথায় আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে, আমরা কোন মতাদর্শের পক...